মঙ্গলে আইনস্টাইন আর হাল্ক
মঙ্গলে আইনস্টাইন আর হাল্ক
মোঃ আবীর হোসেন
মঙ্গল গ্রহের প্রাণীদের ভীষণ দুঃখ। যদিও তারা আজ মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সির সবচেয়ে বুদ্ধিমান প্রাণী ।
চার পা আর তিন হাতের ছোট্ট দেহ নিয়ে তারা গ্যালাক্সির পর গ্যালাক্সি জয় করে চলেছে। অথচ হলুদ বর্ণের শিলাখণ্ডের আঘাতে প্রায়ই অকালে মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। এমনকি ঘর-বাড়ি ও কখনো কখনো ভেঙে চুরমার হচ্ছে। সেবার তো কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধ্বংস হয়েছিল 'বুসাং নগরী' । লক্ষ লক্ষ হলুদ শিলার আঘাতে মঙ্গলের এক-তৃতীয়াংশ প্রাণীর মৃত্যু হয়েছিল। তাই এখন রাজ্যে বিজ্ঞানীর সংখ্যা অনেক বেড়েছ...এমনকি জ্ঞানার্জন এর কেবল একটা শাখাই এ গ্রহে বিদ্যমান। কিভাবে ধ্বংসাত্মক আঘাত থেকে বাচা যায় সেই প্রতীক্ষায় এই গ্রহের প্রাণীরা।
আজ দুই যুগ প্রতীক্ষার পর এমন কোন বিজ্ঞানীর আবির্ভাব হলো না যে কিনা এই আতঙ্ক থেকে এ জাতিকে উদ্ধার করবে। তবে আশার কথা হলো এ বিষয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। শুনেছি একটা নাকি যন্ত্র আবিষ্কার করেছে 'আবরাং হংচু' বিজ্ঞানীর নেতৃত্বে। কিন্তু তা দিয়ে কেবল ওই শিলার গতিবিধি ও আকৃতি কেই পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব। তবে ঝামেলা আছে অনেক...... যন্ত্র দিয়ে অন্য সকল ক্ষেত্রে সঠিক ফলাফল আসলেও কেবল আর কেবল ওই শিলাখণ্ডের ক্ষেত্রে তথ্য মেলে না একটাও। যন্ত্র দিয়ে মাপলে খন্ডটির দৈর্ঘ যা পায় বাস্তবে মঙ্গলে আঘাতের পর তার দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়ে যায়। আবার খন্ড টির বেগ এত বেশি যে তা দেখতে না দেখতেই মঙ্গলপৃষ্ঠে আঘাত করে বসে। একবার তো পর্যবেক্ষণ করা একটি খণ্ড কখন যে ল্যাবের ছাদে আঘাত করেছে কেউ বুঝে উঠতে পারেনি। এভাবে আরো 5 বছর কেটে গেল।
আবিষ্কার হল শিলাখণ্ডের বেগ। যা ছিল প্রায় 2 লাখ 60 হাজার কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড। বিস্ময়ের থমকে গেল বিজ্ঞানী মহল। যেখানে এক লক্ষ কিলোমিটার প্রতি ঘন্টা একটি যন্ত্র তাদের এক অসম্ভব স্বপ্ন সেখানে এত বেগে আঘাত করা এই শিলা কিভাবে আসলো।
এটা কি আদৌ কোনো শিলাখণ্ড, নাকি স্রষ্টার ক্রোধ। নাকি অতি বুদ্ধীমান প্রাণীর কোন ছল চাতুরী, যা কেবল তাদের ভাবিয়ে তুলল। এভাবে দুঃখ কষ্ট আর চিন্তা ভাবনা শেষে একদিন একটি সুখবর আসলো ।'টাকলা মুছো' নামক এক প্রফেসর নাকি শিলাখণ্ডের ছোট বড় হওয়ার ব্যাখ্যা দিতে পারবেন। তাঁর কাছে উপস্থিত হলে তিনি তার ব্যাখ্যা, ভুমিকা ছাড়াই শুরু করলেন- তিনি বললেন-
"মনে করো যখন খণ্ডটি আকাশে দেখেছিলে তা দৈর্ঘ্য ছিল L=1 মিটার। মনে রাখবে, তোমাদের কাছে খণ্ডটি ছিল গতিশীল।
এখন,
তোমরা আঘাত করার পর স্থির খন্ডটির দৈর্ঘ্য মাপলে 2 মিটার।
ধর এই দৈর্ঘ হলো L0=2 মিটার
আর তোমরা সবাই আলোর বেগ জানই এবং তা সেকেন্ডে 3 লক্ষ কিলোমিটার।
অর্থাৎ, ধরো আলোর বেগ C=3 লক্ষ কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ড
=3*108 মিটার/সেকেন্ড
প্রফেসর বলেছেনই আর সবাই হা করে শুনছেন।
এখন তিনি বললেন যে,
L=L0√(1-v2/c2)
আমার তৈরি সূত্র।
যা হতে তোমরা সব মানগুলি বসিয়ে V এর মান টি পাবে এবং তা 2 লক্ষ 60 হাজার মিটার পার সেকেন্ড বা এর খুবই নিকটে।
এ কথা শুনে সবাই হিসাব কষতে লাগল এবং আশ্চর্যের বিষয় মিলেও গেল হুবহু। ঠিক আগের সব ধাঁধা উবে গেল।
বিজ্ঞানীরা বুঝতে পারলেন যে এত অধিক বেগে আসার কারণে শিলাখণ্ড টিকে উপরে এক মিটার দেখলেও মাটিতে তা 2 মিটার হয় অর্থাৎ গতিশীল অবস্থায় শিলাখণ্ড টির দৈর্ঘ্য কমে গেছে। শুধু আর শুধু অধিক বেগে আসার কারণে। বিজ্ঞানীরা এও বুঝতে পারলেন শিলার খন্ড যত ছোট দেখাবে বস্তুত সেটা বেশি গতি নিয়ে ধেয়ে আসছে।
সবই তো বোঝা গেল কিন্তু তা আসলো কি আর আসছেই বা কোথা থেকে। সবারই একটাই প্রশ্ন।
সতেরো বছর আগে ওই শিলাখণ্ডের উৎসের খোঁজে বেরিয়েছিলেন একদল সুদক্ষ অ্যাস্ট্রোনট। নিজেদের জীবন বাজি রেখে খুজতে বেরিয়ে ছিলেন। আগামী মাসে তাদের ফেরত আসার কথা।
একমাস এভাবেই চোখের পলকে পার হয়ে গেল। তারা ফিরেছেন। সবারই প্রবল আকাঙ্ক্ষা কেবল এটা জানতে যে তারা কোন উৎস পেয়েছে কিনা!!! কিন্তু তাদের মুখ মলিন কেন??
কিছুক্ষণ নিরবতা ঠেলে প্রধান যিনি তিনি বলে উঠলেন যে, আমরা খোঁজ পেয়েছি। তবে দুঃখের বিষয় এক সময়কার প্রতিবেশী যারা পৃথিবীতে বাস করত তারা আজ আলফা সেন্টোরি নামক গ্যালাক্সিতে বসবাস করে। আর তাদের নিক্ষিপ্ত এই অপ্রতিরোধ্য বিধ্বংসী অস্ত্র যা আমরা কখনই থামাতে পারবো না তা হল 2 লক্ষ 60 হাজার কিলোমিটার প্রতি সেকেন্ডে নিক্ষিপ্ত হাল্কের পটি............
অসাধারণ ভাই����
ReplyDeleteঅনেক ভালো হইছে
ReplyDelete